লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা / লেবুর উপকারিতা।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হচ্ছে লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে।আমরা অনেকেই সঠিক জানিনা লেবুতে কি কি উপকারিতা রয়েছে। আজ আমরা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো লেবুর উপকারিতা এবং অপকারিতা।
লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা |
ছোট লেবু ফলে রয়েছে নানারকমের গুনাগুন। যা আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন। দেওয়া আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। নিচে লেবুর সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
১) লেবুতে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে ভিটামিন সি।যা অন্যান্য ফলের তুলনায় ভিটামিন সি থাকে লেবুতে। এছাড়াও পাতিলেবুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
২) ইমিউবিটি বুস্টার,আন্টিঅক্সিডেন্টসের সহয়তা হিসাবে পাতিলেবু খুবই পরিচিত। আন্টিঅক্সিডেন্টসের যোগাব হিসেবে পাতি লেবু গুরুত্ব অনেক
৩) ত্বকের সৌন্দর্য ঠিক রাখে পাতি লেবু। মাথার চুল ও রাখে ঠিক।তাই আপনার চুল ও ত্বক ভালো রাখার জন্য আপনি খেতে পারেন পাতিলেবু। কেননা পাতি লেবু আপনার ত্বক ও চুল ভালো রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।
৪) লেবুতে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে ভিটামিন সি যা আপনার শরীরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস। লেবু খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে থাকবে না কোন রকমের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। তাই আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে খেতে পারেন।
৫) যাদের হজম শক্তিতে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য পাতি লেবু খুবই উপকারী। কারণ পাতিলেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড মানুষের হজম শক্তি আরো বেশি বৃদ্ধি করে। তাই আপনার হজম শক্তি বাড়াতে খেতে পারেন পাতিলেবু।
৬) ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পাতি লেবু অনেক বেশি উপকারী। লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মুক্ত হওয়ার পাতিলেবুর রস ডায়াবেটিস থাকা রোগীদের জন্য বেশি কার্যকারী। তাই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেতে পারেন পাতি লেবুর রস।
৭) আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে লেবু।লেবুতে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে ভিটামিন সি এর ভালো উৎস। ছোটে একটি মাঝারি লেবুতে থাকে 44 মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। আর এই ভিটামিন সি আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৮) যারা শরীর স্বাস্থ্যের ওজন কমাতে চান তাদের জন্য লেবু খুবই উপকারী। লেবুতে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার শরীর স্বাস্থ্য ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে খেতে পারেন লেবু।
৯) লেবুতে নেই বললে চলে ফ্যাটের পরিমাণ। লেবু আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল ( LDL) কমিয়ে দিয়ে ভালো কোলেস্টেরল ( HDL) বাড়াতে সহয়তা করে।তাই আপনার শরীর স্বাস্থ্য থেকে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল দূর করতে খেতে পারেন লেবু।
১০) লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড। আর এই সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনির পাথর ভেঙ্গে দেয় এবং প্রম্রাবনালীর মাধ্যমে তা বের করে দেয়। তাই আপনি যদি সাইট্রিক অ্যাসিড পেতে চান তাহলে খেতে পারেন লেবু।
লেবুর অপকারিতা
ভালো খারাপ নিয়ে একটি জিনিসের ধর্ম। একটা জিনিস খাওয়ার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত ভালো খারাপ ও উভয় দিক সম্পর্কে।
১) বিশেষ করে অনেকেই অ্যাসিডিটির সমস্যা ভোগেন বা সমস্যা আছে তারা অতিরিক্ত লেবু খেলে বুক জ্বালা করবে। আর যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে তারা বেশি পরিমাণে কখনো লেবু খাবেন না।
২) শরীর স্বাস্থ্যের ওজন কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসে লাগাম টানা হলো কার্বোহাইড্রেট ও অন্যান্য পুষ্টিগুণের অভাব দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে লেবুপানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে শরীর স্বাস্থ্যতে ক্লান্তি ভর করতে পারে।
লেবু বেশি খেলে কি ক্ষতি হতে পারে?
৩) অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার পরে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।এতে করে পেট ফাঁপাসহ নানা রকমের সমস্যা হতে পারে।তাই কখনো অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে কখনো লেবু খাবেন না।
৪) অতিরিক্ত লেবু ও লেবুর শরবত খাওয়ার কারণ আপনার পেটে ও তলপেটে ব্যাথা হতে পারে।তাই নিয়ম মাফিক লেবু ও লেবুর শরবত খাবেন।
৫) লেবুর শরবত বেশি পরিমাণে পান করলে শরীর স্বাস্থ্যের দুর্বলতা অনুভব হতে পারে।
লেবুর শরবতের উপকারিতা
১) আপনার যখন মাথা ঘুরাবে তখন আপনি খেতে পারেন এক গ্লাস লেবুর শরবত। এটি আপনার মাথা ঘোরানো কমাতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।
২) শরীর যখন দুর্বলতা অনুভব করবেন তখন আপনি খেতে পারেন এক গ্লাস লেবুর শরবত। এটি আপনার শরীরের দুর্বলতা কাটাতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
৩) লেবুর শরবত তৈরি খাওয়ায় পরে আমাদের শরীরে ভিতরে জমে থাকা টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়।শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বাহির করতে আপনি খেতে পারেন লেবুর শরবত।
৪) লেবুর শরবত শরীর স্বাস্থ্যের ওজন কমানোর সেরা একটি মাধ্যম। যারা প্রাকৃতিক ভাবে শরীর স্বাস্থ্যের ওজন কমাতে চাই তাদের জন্য লেবুর শরবত খুবই উপকারী। নিয়মিত লেবুর শরবত পান করলে দ্রুত শরীর স্বাস্থ্যের ওজন কমবে।
৫) প্রতিদিন লেবুর শরবত পান করলে আমাদের ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বজায় থাকে।যার ফলে আমাদের ত্বক থাকে সুন্দর।
৬) অন্যান্য ফলের চেয়ে লেবুতে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর আমার পূরণ করতে পারে লেবুর শরবত। দেবের শরবত খেলে আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়ে যায়। ভিটামিন সি স্কাইভি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ভিটামিন সি ক্যান্সার, হৃদয়রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক সাহায্য করে।
৭) ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা নিয়মিত লেবুর শরবত পান করেন তাদের চেহারা থেকে বয়স্কের চাপ দূর হয়ে যায়। লেবুর শরবতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের বলি রেখা কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি কোনাজেন নামক রাসায়নিককে সক্রিয় করে টিস্যুগুলো মেরামতে সহায়তা করে।
লেবুর খোসার উপকারিতা
এখন আমরা কথা বলবো লেবুর খোসার উপকারিতা নিয়ে। শুধু লেবুর রসে নয় লেবুর খোসাতে রয়েছে স্বাস্থ্যের উপকারিতা। যা আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন। তাই শরীর স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যে আপনি খেতে পারেন লেবুর খোসা। লেবুর খোসা খেলে বিভিন্ন রকমের রোগ ভালো হয়।
১) লেবুর খোসাতে রয়েছে ভিটামিন সি আরো রয়েছে সাইট্রিক এসিড। আর এসব উপাদান আমাদের দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া জিঞ্জিভাইটিসসহ একাধিক রোগ প্রতিরোধ করে। তাই এসব রোগ দূর করতে আপনি খেতে পারেন লেবুর খোসা। কেননা লেবুর খোসা আপনার এসব রোগ দূর করে।
২) লেবুর খোসায় রয়েছে সাইট্রাস বায়ো ফ্লেভোনয়েড নামক উপাদান ,যা শরীর-স্বাস্থ্যের স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।
৩) আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে লেবুর খোসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেবুর খোসাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।যা আমাদের শরীর থেকে টক্সিক বের করে দেয়।
৪) লেবুর খোসা তে থাকে সয়ালভেসস্ট্রল কিউ ৪০ ও লিমোনেন্স।ক্যান্সারের কোষ গুলোকে ধ্বংস করে। বয়াটেকরিয়াল ও ছত্রাক সংক্রমণের প্রকোপ কমায়। তাই আপনি খেতে পারেন লেবুর পাশাপাশি লেবুর খোসা।
৫) নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে শরীরে সাইট্রিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।এই লেবুর খোসা খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকির প্রবণতা কমায়। তাই কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে আপনি খেতে পারেন লেবুর খোসা।
৬) লেবুর খোসা তে রয়েছে প্য়াকটিন নাম এই উপাদান। যা আমাদের শরীরে ফরাট বার্ন করে।আর এমনিতে লেবুর খোসা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
লেবুর খোসা দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
১) মুখ ও হাতে পায়ের দাগ দূর করার জন্য লেবুর খোসা খুবই উপকারী। হাতে পায়ে মুখে যেখানে দাগ রয়েছে সেইখানে লেবুর খোসা প্রতিদিন 5 মিনিট করে ঘষুন।এতে করে আপনার শরীরে থাকা দাগগুলো ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।
২) লেবুর খোসা গুলো ছোট ছোট করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিন।এরপরে ছোট কাফের আধা কাপ চিনির সঙ্গে এক চামচ লেবুর খোসা টুকরো ও তার সাথে দুই চামচ পরিমাণ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি তৈরি করার পরে আপনাকে 10 মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
৩) লেবুর খোসা টুকরো টুকরো করে রোদে শুকিয়ে নিন। এরপরে খোসা গুলোকে গুঁড়ো করে নিন। গুঁড়ো করা খোসা গুলোর সাথে পরিমাণমতো দুধ মিশিয়ে নিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। আর এই তৈরি করা পেস্ট ত্বকে 10 মিনিট লাগিয়ে রাখুন। 10 মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
৪) লেবুর খোসা গুঁড়ো করার পরে পরিমাণ মতো ডাবের পানি দিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। আর এই পেস্ট ত্বকের বরণে লাগিয়ে রাখুন 10 মিনিট করে। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ সহজে দূর হয়ে যাবে।
৫) ত্বক উজ্জ্বল করতে আপনি তৈরি করতে পারেন আরেকটি মাধ্যম লেবুর খোসা দিয়ে।গুঁড়ো করা লেবুর খোসার সাথে আদা চামচ হলুদের গুঁড়ো ও এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন।যাদের পথ একেবারে শুষ্ক তারা মধুর পরিবর্তে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে এটি তোমাকে লাগিয়ে রাখুন তারপর ধুয়ে ফেলুন। যদি ত্বকের অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
গরম পানির সাথে লেবু খেলে কি হয়?
গরম পানির সাথে লেবু খেলে শরীর স্বাস্থ্যের অনেক উপকার পাওয়া যায়। কি কি উপকার পাওয়া যাবে সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
১) তাহলে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে আমাদের শরীরের ভিতরে পিএইচ লেভেলের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এরপর আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আমাদের স্বাস্থ্যের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য খাওয়া যেতে পারে গরম পানির সাথে খাওয়া যেতে পারে লেবুর রস।
২) লেবু ত্বকের উজ্জলতা ঠিক রাখে। আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চাহিদা পূরণ করে এবং আমাদের কিডনির পাথর ও প্রতিরোধ করে। লেবুর এই দুটি গুণ অত্যন্ত সেরা।
৩) লেবু আপনি আপনার শরীর স্বাস্থ্য ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। লেবু ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং চেহারা থেকে বয়সের চাপ কমাবে।
৪) প্রতিদিন সকালে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে সারাদিনের হজমশক্তি ভালো থাকবে। লেবুর রস হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।তাই আপনার হজমশক্তি ভালো রাখতে আপনিও খেতে পারেন হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস।
৫) লেবুতে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে ভিটামিন সি এর উৎস। আর এই ভিটামিন সি আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যের হরমোন কে সক্রিয় রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
৬) আপনি যদি লেবুর শরবত পান করেন তাহলে সেটা চিনি ছাড়া খেতে চেষ্টা করুন।লেবুতে থাকা ভিটামিন স্কাভি রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। লেবুর শরবত আপনি তৈরি করতে পারেন গরম পানি দিয়ে।