লিচুর উপকারিতা - লিচু খাওয়ার উপকারিতা - লিচু খাওয়ার অপকারিতা
আমাদের আজকের আর্টিকেল কি হচ্ছে লিচুর উপকারিতা নিয়ে।আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব লিচু উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। কোন কিছু আমরা খাব এটা স্বাভাবিক। তবে সে জিনিসটার খারাপ দিক ভালো দিক উভয়টি জেনে খাওয়া ভালো। তাহলে পরবর্তী আমাদের কোনো আর সমস্যা হবে না।
লিচুর উপকারিতা |
লিচু ফলটি খুবই সুন্দর। এটি সারা বছর পাওয়া যায় না। এটি পাওয়া যায় শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালে।এদেশে গ্রীষ্মকালে নানা রকমের ফল বাহির হয়।গ্রীষ্মকালের ফলগুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম সেরা ফল।এই ফলে পুষ্টিগুণে ভরপুর রয়েছে ।
মৌসুমে পাওয়া যায় লিচু নামক ফলটি। এটি দেখতে খুবই সুন্দর এবং আকারে খুব ছোট। ছোট ফলটিতে পুষ্টিগুণে রয়েছে ভরপুর।
লিচুর আপনাকে নানা রকমের অসুখ থেকে দূরে রাখবে এবং এটি বেশি খেলে হতে পারে আপনার বিভিন্ন রকমের সমস্যা। তাই কোন কিছু নিয়মের বাহিরে খাওয়া ঠিক নয়।
লিচুর উপকারিতা
১) লিচু দূর করে ব্যথা।শরীরে ব্যথা থাকলে লেচু খাওয়ার পরে শরীরের ব্যথা দূর হয়ে যায়। লিচু ফলটি শরীরের বিভিন্ন রকমের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
এটি শরীরের ব্যথা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আমাদের।
২) লিচু আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী। লিচু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।
৩) লিচুতে রয়েছে ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ভিটামিন। ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াই। এছাড়া ভিটামিন সি আমাদের ত্বক ও দাঁত এবং হাড়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪) লিচুতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং খনিজ উপাদান। এই ভিটামিন সি এবং খনিজ উপাদান রক্তের উপাদান তৈরি করতে সাহায্য করে।
৫) লিচুতে রয়েছে পটাসিয়াম। লিচুতে থাকা পটাসিয়াম আমাদের শরীরের রক্ত ও নালির চাপ কমিয়ে দিয়ে রক্তের চলাচলের স্বাভাবিক গতি বাড়ায়। যার ফলে আমাদের শরীরে একেবারে সহজে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
৫) লিচুতে আছে ফ্ল্যাভানয়েডস নামক একটি উপাদান। যে উপাদানটি আমাদের শরীরের স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাই স্তন মরণ নামক ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধের জন্য লিচু খাওয়া যাবে।
৬) লিচু আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
লিচু খাওয়ার অপকারিতা
১) নিয়মের বাইরে বেশি পরিমাণে লিচু খেলে আমাদের শরীরের রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
২) লিচু আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে। তাই বেশি পরিমাণে লিচু খাওয়া উচিত নয়।
৩) লিচুতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুলি ফ্যাটি এসিড নেই। যার ফলে আমরা যদি বেশি পরিমাণে লিচু খাই তাহলে আমাদের শরীরের ব্যালেন্স নষ্ট করে দেবে। তাই বেশী পরিমানে লিচু খাওয়া যাবে না।
৪) খালি পেটে লিচু খাওয়া যাবেনা। কারণ খালি পেটে লিচু খেলে আমাদের শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
৫) অতিরিক্ত কিছু খাওয়ার পরে আমাদের শরীরের রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।
লিচুর পুষ্টি উপাদান - লিচুতে কোন কোন ভিটামিন রয়েছে
ছোট লিচুতে রয়েছে পুষ্টিগুণে ভরপুর।জেনে নিন লিচুতে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে। 100 গ্রাম লিচুতে রয়েছে জলীয় অংশ 84.1,খাদ্যশক্তি 61 কিলো ক্যালোরি,শর্করা 13.6 গ্রাম,ক্যালসিয়াম 10 গ্রাম এবং ভিটামিন সি রয়েছে 31 মিলিগ্রাম। এগুলো হচ্ছে লিচুর পুষ্টিগুণ বা লিচুর গুনাগুন।
খালি পেটে লিচু খেলে কি হয়
খালি পেটে লেবু খাওয়া যাবে না এটি বলেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকেরা বলেছেন খালি পেটে লিচু খেলে এটি মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। লিচুতে রয়েছে হাইপোগ্লাইসিন নামক রাসায়নিক। যা আমাদের শরীরের শর্করা তেরি রোধ করে।
শিশুরা খালি পেটে অতিরিক্ত লিচু খেয়ে ফেললে শিশুদের শরীরের শর্করা একেবারে কমে যেতে পারে। খালি পেটে লিচু খাওয়ার কারণে শিশুর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।শিশুদেরকে কখনো খালি পেটে লিচু খেতে দিবেন না।
শিশু যখন খালি পেটে অনেকগুলো লিচু খেয়ে ফেলবে তখন পেটে বিষ তৈরি হয়।যার ফলে শিশুদের খিঁচুনি শুরু হয়ে যায় এবং তার সাথে সাথে বমিও শুরু হয়ে যায়।এরপরে শিশুরা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এজন্য আপনাদের শিশুকে কখনো খালি পেটে লিচু খেতে দিবেন না। শিশুকে খালি পেটে দিয়েছো খেতে দিলে এ রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেএরকম সমস্যায় সমস্যার সম্মুখীন হবে আপনার শিশু । তাই কখন আপনার শিশুকে খালি পেটে লিচু খেতে দিবেন না।
লিচু ইংরেজি কি
লিচু ইংরেজি হল - lychee
গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে কি
নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে গর্ভকালীন সময়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এসময় আপনাকে জেনে রাখতে হবে চলাফেরা, জীবনধারণ, খাদ্যের ব্যাপারে ইত্যাদি সবকিছু সচেতন। মায়ের সাবধানতা নিশ্চিত করে একটা সন্তানের জন্ম।
লিচু হচ্ছে গ্রীষ্মকালের ফল। আপনি চাইলে এই ফলটি সারাবছর পাবেন না। আমরা এখন কথা বলব গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে কিনা। চিকিৎসকেরা বলেছেন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে লিচু খাওয়া যাবেনা। কারণ অতিরিক্ত লিচু খেলে গর্ভবতী মায়ের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা, মৃত সন্তান জন্মদান এবং শরীরের অ্যালার্জির প্রবণতা বাড়িয়ে তুলতে পারে অনেকটাই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন গর্ভ অবস্থায় মহিলাদের সারাদিনে তিন চারটা খাওয়া যেতে পারে। এতে কোন সমস্যা হবে না। অনেক গর্ভবতী মা মনে করেন গর্ভ অবস্থায় লিচু খাওয়া যাবেনা। এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা। গর্ভ অবস্থায় লিচু খেতে পারবেন। তবে আপনাকে খেতে হবে অল্প পরিমাণে। সারাদিনে তিন-চারটে লিচু খেতে পারেন। এটি আপনার জন্য যথেষ্ট।
আমাদের শেষ কথা
এই ছিল আমাদের আজকের আর্টিকেল।আশা করি আজকে আর্টিকেল থেকে আপনারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। ইতিপূর্বে আপনার জেনে গেছেন লিচু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। ছোট এ ফলটি খেতে সুস্বাদু হলেও বেশি পরিমাণে খাবার কোনো সুযোগ নেই। এককথায় বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবেনা ফলটি। দিনে 10 থেকে 12 টি লিচু খাওয়া যেতে পারে। বয়স, শরীর, অসুস্থতা ইত্যাদি বিবেচনা করে নিয়মমাফিক লিচু বা অন্য যে কোনো ফল খেতে হবে। নিয়মের বাইরে কোন কিছু খেতে যাবেন না। এতে করে আপনার শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হবে।