মেয়েদের ইসলামিক নাম - ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
আমাদের আজকের লিখে হচ্ছে মেয়েদের ইসলামিক নাম এবং ছেলেদের ইসলামিক নাম নিয়ে। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ছেলে মেয়েদের ইসলামিক নাম রাখা। পৃথিবীর যত নাম রয়েছে তারমধ্যে সুন্দরতম নাম হচ্ছে ইসলামিক নামগুলো।আল্লাহ সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুক আমিন।
মেয়েদের ইসলামিক নাম |
উম্মতে মুহাম্মাদির প্রতিটি সদস্যের সুন্দর নাম রাখা অতীব জরুরি। মহানবী (সা.)হাদিস শরীফে সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখার ব্যাপারে অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেছেন।
সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর অর্থবোধক নাম রাখা ইসলামের অন্যতম বিধান।তবে কাফের,মুশরিক ও কুখ্যাত পাপীদের নামানুসারে নাম রাখা নিষেধ।
নাম রাখার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা সূরা হুজুরাতে বলেন _
وَ لَا تَنَابَزُوۡا بِالۡاَلۡقَابِ ؕ بِئۡسَ الِاسۡمُ الۡفُسُوۡقُ بَعۡدَ الۡاِیۡمَانِ
আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট!
অথচ বর্তমান সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় আমরা ইহুদি, খৃষ্টান, হিন্দু বৌদ্ধদের নামে মুসলমানগণ নিজেদের সন্তানসন্ততির নাম রাখছে।এমন নাম রাখে যে নামের সুন্দর একটি ইসলামিক অর্থ ও হয় না।যেমন_ পলি,প্রিয়াংকা,বিউটি,ডলি,শশী,রবি,মন্টু,রতন আরো কত কি।
হাদিসে এসেছে,রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামত দিবসে তোমাদেরকে তোমাদের নামে এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের নামানুসারে ডাকা হবে।সুতরাং তোমরা তোমাদের নাম গুলো উত্তম দেখে রাখো। (আহমদ ও আবু দাউদ)
চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আপনাদের কাঙ্ক্ষিত মেয়েদের ইসলামিক নাম গুলো দেখে নি। আর আপনার সন্তানের জন্য অর্থবহ ইসলামিক নাম পছন্দ করে নিন।
আলহামদুলিল্লাহ, মেয়েদের জন্য ইসলামিক নাম খুবই সুন্দর এবং অর্থসহ। নিচে কয়েকটি মেহমান নামের উদাহরণ দেওয়া হল।
মেয়েদের ইসলামিক নাম
১। আযমা - বেশী সুন্দর ও আকর্ষণীয়।
২। আফিয়া - সুস্বাস্থ্য এবং সুখী।
৩। আলিফা - মেহেরবান ও কারুণিক।
৪। আমনা - বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহৃদয়।
৫। আরিফা - জ্ঞানী ও শিক্ষিত।
৬। ইমান - বিশ্বাস ও নির্ভয়।
৭। উমেরা - স্বতন্ত্র ও সাহসী।
৮। খাদিজা - খুশী এবং সত্যবাদী।
৯। জাবিনা - যে সবকিছু জেনে এবং বুঝে।
১০। তাহেরা - তাজগীর করা এবং আনন্দময়।
১১। নাদিয়া - দীর্ঘ সময় একই কাজ করার জন্য প্রস্তুত।
১২। ফারিদা - একল ও অনন্য।
১৩। বাস্তানা - ফুলসজ্জিত বা গার্ডেন অব ডেকোরেটেড।
১৪। বরিশা - প্রেমময় ও সহৃদয়।
ইসলামিক নাম মেয়েদের অর্থসহ
১৫। বুশরা - আনন্দময় ও আলোকিত।
১৬। মাহিরা - একটি শিখর যা মুখ করে এক দিকে উঠে।
১৭। মারজিআ - একটি প্রতিবেশী এবং পূর্ণাঙ্গ মানুষ।
১৮। মারিয়াম - মেরি বা মারি সম্পর্কে সূচিত করে।
১৯। নাসিয়া - কিন্তু সম্পূর্ণ একটি না।
২০। নাদিয়া - দীর্ঘ সময় একই কাজ করার জন্য প্রস্তুত।
২১। নাদিয়া - দীর্ঘ সময় একই কাজ করার জন্য প্রস্তুত।
২২। নবিয়া - প্রফেশনাল এবং বিদেশী ভাষার অনুকরণ করে কর্মক্ষম।
২৩। নূর - আলোকিত ও নির্ভরযোগ্য।
২৪। ফারহানা - উত্সাহী এবং সন্তোষজনক।
২৫। ফাতেমা - একজন স্বর্গীয় মহিলা বা বিশুদ্ধ মহিলা।
ইসলামিক নাম মেয়েদের অর্থসহ
২৬। ফারিদা - একল ও অনন্য।
২৭। ফয়সা - প্রগতিশীল ও জ্ঞানভর্তি।
২৮। বিন্দু - ছোট এবং সুন্দর।
২৯। বুশরা - আনন্দময় ও আলোকিত।
৩০। বানু - পরিষ্কার এবং সুন্দর।
৩১। বিশাখা - স্বর্ণময় স্টার।
৩২। বুশরা - আনন্দময় ও আলোকিত।
৩৩। মাহিরা - চমৎকার বা আকর্ষণীয়।
৩৪। মেহজাবিন - জিনিস যা নায়িকাকে প্রতিবিম্বিত করে।
মেয়েদের ইসলামিক নাম |
৩৫। মেহদি - উপহার দেওয়া অসম্ভব প্রতিজ্ঞা করা।
৩৬। মাহবুবা - প্রিয় বা মনোহর মহিলা।
৩৭। লেমা - দক্ষতার স্ত্রী বা বিচক্ষণ মহিলা।
৩৮। লেবনা - শুদ্ধতা বা পরিষ্কার মহিলা।
৩৯। সামিরা - প্রসন্ন এবং সুন্দর।
৪০। সাহানা - প্রতিজ্ঞা বা স্বপ্ন দেখা মহিলা।
৪১। সাদিয়া - উদার বা উদারহৃদয় মহিলা।
৪২। সাদিকা - সত্যবাদী মহিলা।
৪৩। সাহারা - সমুদ্র এবং একটি আলোর স্ত্রী।
৪৪। সালমা - শান্তির মহিলা বা শান্তির অংশ।
৪৫। সামিয়া - শুনে বুঝতে সক্ষম মহিলা।
৪৬। সামেনা - স্বপ্ন বা ইচ্ছার সম্পন্ন মহিলা।
৪৭। সানিয়া - উচ্চ অথবা সম্মানজনক মহিলা।
৪৮। সানিরা - সূর্যমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা বা তারকা।
৪৯। সারা - সম্পূর্ণ বা সম্পন্ন মহিলা।
৫০। সাবিকা - পুরানো এবং পূর্বাভাসী মহিলা।
ছেলেদের ইসলামিক নাম। আপনার ছেলে সন্তানের নামগুলো সব সময় ইসলামিক নাম রাখবেন। কেননা ছেলে সন্তানের ইসলামিক নাম রাখা অনেক ভালো। এটাতে আল্লাহ অনেক খুশি হয়। আমি মনে করি মুসলমানদের ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তানের নামগুলো ইসলামিক মোতাবেক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
সালাম। নিচে কিছু ছেলেদের ইসলামিক নাম এবং তাদের অর্থ দেওয়া হল।
ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
১) আব্দুল্লাহ - আল্লাহর বান্দা
২) আবুবকর - মহান পূর্ববর্তী
৩)আব্দুর রহিম - পরম দয়ালু
৪) আদিল - ন্যায়বান
৫) আফসার - স্বর্ণসিংহ
৬) আফজাল - অত্যধিক উত্কৃষ্ট
৭) আফরোজ - আরও উজ্জ্বল
৮) আব্দুল করিম - করুণাময়
৯) আকিল - বুদ্ধিমান
১০) আলাম - জ্ঞানী
১১) আলী - উচ্চ
১২) আমির - শক্তিশালী
১৩) আমিন - আমানতদার
১৪) আরাফাত - পর্বতের উচ্চতা
১৫) ইবরাহিম - আব্রাহামের নাম
১৬) ইউনুস - জন্তুর নাম
১৭) ইমরান - উন্নয়নশীল
১৮) ইশাক - সুখের সন্ধানের জন্য প্রার্থনা করা
১৯) ইশতিয়াক - আকাশের অন্যতম নক্ষত্র
২০) ইবনে সিনা - সিনার পুত্র
২১) উমার - প্রজ্ঞাশালী
২২) উবাইদ - ছোট বাঁচাই
২৩) উবায - উচ্চতার পর্বত
২৪) উবাইদুল্লাহ - আল্লাহর ছোট বাঁচাই
২৫) উসামা - শিরোপা
ছেলেদের ইসলামিক নাম
২৬) উস্মান - নির্ভুল
২৭) উত্বান - সুখের উপহার
২৮) কামরান - খুশী
২৯) কাসেম - অধিকার দাতা
৩০) খালেদ - শক্তিশালী
৩১) গাজী - বিজয়ী
৩২) গাজীউদ্দিন - দ্বীনের বিজয়ী
৩৩) গোলাম - কর্মচারী
৩৪) গুলশান - ফুলের বাগান
৩৫) গোলাম কিবরিয়া - কিবরিয়া নদীর কর্তা
৩৬) চঙ্গিজ - বিজয়ী
৩৭) জাকারিয়া - আল্লাহর স্মরণকারী
৩৮) জাকির - স্মরণকারী
ছেলেদের ইসলামিক নাম |
৩৯) জামিল - সুন্দর
৪০) জিনান - জন্যপূর্ণ স্থান
৪১) জুবায়ের - স্মরণকারী
৪২) জুবের - স্মরণকারী
৪৩) জুনায়েদ - উন্নয়নশীল
৪৪) জাহেদ - সমরাসামরিক
৪৫) জাহিদ - কঠোর পরিশ্রমশীল
৪৬) জয় - বিজয়ী
৪৭) জয়নুল - আল্লাহর বিজয়ী
৪৮) জুলফিকার - মহিমাময় সিংহাসন
৪৯) জিয়াউর - আল্লাহর জ্ঞান
৫০) জিয়ান - জীবন
আমাদের শেষ কথা
ইসলাম হলো মানবতার কল্যাণমুখী ধর্ম।যেখানে একজন সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর তার কেমন নাম রাখা উচিত ইসলাম আমাদের তাও জানিয়ে দিচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!
নবীজি (সা.) কারো অসুন্দর নাম দেখলে পরিবর্তন করে দিতেন।
عَنْ عَائِشَةَ، أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ يُغَيِّرُ الاِسْمَ القَبِيحَ.
হযরত আয়েশা রা. বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মন্দ ও অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে দিতেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৮৩৯
সুতরাং আমাদের সন্তানদের নাম রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক হওয়া উচিত।এমন কোন নাম না রাখা যে নামের পরিপূর্ণ সুন্দর একটি অর্থ হয় না।তাই আমাদের সবার উচিত আমাদের মেয়ে সন্তান এবং ছেলে সন্তানের নাম ইসলামিক মোতাবেক রাখা।ছেলে সন্তানের ইসলামিক নাম এবং মেয়ে সন্তানের ইসলামিক নাম রাখলে আল্লাহতালা অনেক খুশি হবেন। তাই আমরা কখনো আমাদের ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তানের নাম কখনো ইসলামিক নামের বাইরে রাখবো না।
আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে।আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করতে পারেন।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।