ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ
আজকাল প্রায় সর্বত্র ক্যালসিয়াম রয়েছে এবং আপনি চাইলেও ক্যালসিয়াম থেকে দুরে থাকা অত্যান্ত কঠিন। পাওরুটি, দুধ, কমলার জুস, পাস্তা, দই, চুইংগাম, পেপসুডেন্ট, ডাবের পানি, ইত্যাদি খাদ্যে ক্যালসিয়াম রয়েছে। এমনকি জায়গা ও স্থান ভেদে খাবারের পানি সহ, প্রায় সব জায়গায় ক্যালসিয়ামের বিস্তার রয়েছে।
কিন্তু আপনি হয়ত একটু লক্ষ করলে দেখবেন। আমাদের আশপাশে এত সব ক্যালসিয়াম থাকা সর্তেও আমাদের মাঝে অনেকেরেই.... হাত ও ঠোট ফেঠে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, শরীরে গিটে-গিটে প্রচন্ড ব্যাথা। শরীরে পানি শূণ্যতা, হজম শক্তি দুর্বল, দাঁতে ব্যথা, শরীর দিনদিন রোগা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। নানা সমস্যায় আমরা সবাই কম বেশি জর্জরিত।
যার কারণে আমরা প্রায় সময় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। ডাক্টার আমাদের কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর বলেন আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামেরর ঘটতি রয়েছে। তারপর তিনি আমাদের সেই অনুযায় কিছু সাপ্লিমেন্ট ও খাবারের কথা বলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন ক্যালসিয়াম কি বা কেন আমাদের শরীরে জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ? অথবা কিভাবে এই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দুর করা যাবে? যদি জানতে চান তাহলে পোস্টি আপনার জন্য......
মানব দেহের ক্যালসিয়ামের অভাব দুর করার লক্ষে বিশেষ্জ্ঞরা ৫ বছরের জন্য ১৪৭১ জন মহিলার ওপর একটি গবেষণা পর্যবেক্ষণ করেন। সেখানে তারা মহিলাদের দুটি গ্রুপে বিভক্তি করেন। এবং প্রথম দল মহিলাদের প্রতিদিন ১ গ্রাম করে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করার নির্দেশ দেন। এবং দ্বিতীয় গ্রুপকে শুধুমাত্র ফ্লাক্সিবল দেওয়া হয়। অর্থাৎ তাদের কোন ঔষধি গ্রহণ করতে দেওয়া হয় না।
গবেষণা শেষে আশ্চর্যজনক একটি তথ্য বের হয়ে আসে, যেটা দেখে বিশেষজ্ঞরা সবাই হতবাক হয়ে পড়েন। সেটা ছিল যেসব মহিলাদের প্রতিদিন ১ গ্রাম করে ক্যালসিয়াম গ্রাহণ করতে দেওয়া হয়ে ছিল। তাদের দ্বীতৃয় গ্রুপ মহিলাদের তুলনায় হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মরা যাওয়ার ঝুকি ২ গুণ বেড়ে গিয়েছিল।
তার মানি যারা ক্যালসিয়ামের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেছিলেন তাদের হূদরোগে আক্রান্ত ও স্টক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছিল। এছাড়াও ব্রিটিশ জার্নাল মেডিকেল ক্যালসিয়ামের ওপর ১১টি ধাপে আলাদা আলাদা করে একটি পরিক্ষা পর্যালোচনা করে দেখেন, যারা প্রতিদিন ৫০০ এমজি করে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করেন তাদের হার্ট অ্যাটাক এর ঝুকি ৩১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
তাই সত্যিই যদি আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি না থেকে থাকে, তাহলে ক্যালসিয়ামের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুকিপূর্ণ।
আরও পড়ুন ঃ ঘুমানোর সঠিক সময় কখন? ঘুম থেকে ধেরিতে উঠলে শরীরের কি ঘটে?
এই পোস্টি সম্পূর্ণ পড়লে আশা করা যায় আপনি জীবনে কখনও আর ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগবেন না। তো চলুন শুরু করি....
আপনি যদি আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দুর করতে চান তাহলে প্রচুর পরিমানে সবুজ শাক-সবজী খেতে পারেন, যেটি আপনার দেহের ক্যালসিয়ামের অভাব দুর করবে। এছাড়াও আপনি চাইলে মাছ, মাংশ, ডিম, দুধ ইত্যাদি থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহন করতে পারেন।
বিশেষ করে আমাদের যাদের হাড় ক্ষয় সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজন হচ্ছে রাতে ঘুম। কেননা সারাদিনের পরিশ্রমের ফলে আমাদের শরীরে অনেকটা শক্তি ও হাড়ের ক্ষয় হয়। যেটা আমরা রাতের ঘুমের মাধ্যমে পুনর্গঠন করতে পারি। তাই আমাদের সকলের রাত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। এতে আমাদের শরীরে হাড়ের সমস্যা গুলো আমরা কোন ধরনের ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করা ছাড়াই পিরিয়ে আনতে পারি।
এছাড়াও ক্যালসিয়ামের ভাব দুর করতে বা আপনার শরীরের হাড়কে শক্ত ও মজবুত করতে আমি আপনাদের ম্যাগনেসিয়াম সেবনের পরামর্শ দি। কেনান ম্যাগনেসিয়াম সত্যিই আপনার হাড়কে মজবুত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম আপনার শরীরের ক্যালসিয়াম কে হাড়ের মধ্যে কাজে লাগাতে ব্যবহৃত হয়। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ৪০০ এমজি করে ম্যাগনেসিয়াম সেবনের চেষ্টা করুন। তাহলে আপনি প্রতিদিন খাবার থেকে যে সকল ক্যালসিয়াম গ্রহণ করবেন সেগুলোকে সঠিকভাবে দেহে লাগাতে এটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করবে।
এছাড়ও আপনি চাইলে ভিটামিন ডি বা ভিটামিন কে টু সেবন করতে পারেন। যেগুলো আপনি নিকটস্থ যেকোন ডাক্তার দোকানে খুব সহজে পেয়ে যাবেন।
• জেনে নিন কোন কোন খাবার থেকে আপনি সর্বাধিক ক্যালসিয়াম পেতে পারেন ।
দুধ : দুধে প্রচুর ক্যালশিয়াম থাকে , এ তথ্য আমাদের সবার জানা । এক কাপ মাঠাযুক্ত দুধে আপনি মিনিমাম 270 মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাবেন । সঙ্গে ভিটামিন ডি আর এ - ও মেলে । চিজ় : প্রোটিন , ভিটামিন , ক্যালসিয়াম , ছাড়াও ফসফরাস ও জিঙ্কের মতো মিনারেলের সন্ধান মিলবে চিজ়ে ৷
তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় চিজ় বা ছানা রাখতে পারেন ৷ দই : যাঁরা দুধ হজম করতে পারেন না , তাঁদের জন্য আদর্শ অপশন হচ্ছে দই । এক কাপ দইয়ে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ মিনিমাম 280-290 মিলিগ্রামের কাছাকাছি । তবে এ ক্ষেত্রেও ফুল ফ্যাট দুধের দই সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ । এর মধ্যে যে প্রোবায়োটিক ল্যাকটোব্যাসিলাস থাকে , তা শরীরের জন্য অনেক উপকারী ।
▶ সবুজ পাতাযুক্ত শাক-সবজি : পালং , সরষে , নটে শাক , বাঁধাকপি , ব্রকোলি , ফুলকপি ইত্যাদিতেও ক্যালসিয়ামের জোগান ভালোই । এছাড়াও ডাল : রাজমা , ছোলা , মশুর ডাল ইত্যাদি নানা ধরনের ডালেও প্রচুর ক্যালশিয়াম মেলে । এক কাপ রান্না করা মুগ ডালে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ মিনিমম 270 মিলিগ্রাম । শুকনো ফল : শুকনো এপ্রিকট , খেজুর , বাদামেও বেশ ভালো পরিমাণেই ক্যালশিয়াম মেলে ৷
সামুদ্রিক মাছ , ডিম , মাংস : যাঁরা আমিষ খেতে ভালোবাসেন , তাঁদের ক্যালশিয়ামের জোগান দেয় সমুদ্রের মাছ , ডিম ও মাংস । , তবে প্রতিদিন এক গ্লাসের বেশি দুধ খেলে উলটো হাড় ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে , কারন মনে রাখবেন অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ সো অতিরিক্ত ক্যালসিয়মা গ্রহণ স্বস্থ্যের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর
• টপিক ট্যাগ
ক্যালসিয়াম কি?
ক্যালসিয়ামের কাজ কি?
ক্যালসিয়ামের ঔষধ
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি
ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার
ক্যালসিয়ামের অভাব দুর
ক্যালসিয়াম কেন প্রয়োজন?
ক্যালসিয়াম বাড়ানোর উপায়
ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট